মণিরামপুর প্রতিনিধি: যশোরের মণিরামপুরে পরকিয়ার অভিযোগে রহিমা বেগম (৩৮) নামে এক বিধবাকে মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। এরপর লজ্জায় অপমানে ওই বিধবা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে আজ রোববার বিকেলে গৃহবধূর ভাই আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ বরুন দত্ত (৩৮) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে।

গত শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার পোড়াডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রহিমা ওই গ্রামের মৃত ইছানুর রহমানের স্ত্রী। এ দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। ৫-৬ আগে বিদ্যুৎ স্পর্শে মারা গেছেন ইছানুর। এরপর মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ১৩ বছরের ছেলেকে নিয়ে স্বামীর ভিটায় থাকতেন রহিমা।

তবে বিধবা রহিমার মামা নাজমুল সরদার বলেন, রহিমাকে বিভিন্ন সময় স্থানীয় কয়েকজন কু প্রস্তাব দিতো। সে রাজি না হওয়ায় পরকিয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে তাকে মারপিট করে হত্যা করা হয়েছে। পরে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানো হয়েছে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানান, আটক বরুনের সাথে পরকিয়া ছিল রহিমার। শনিবার মধ্যরাতে রহিমার ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় ৩-৪ জন বরুনকে বাড়ির সামনে রাস্তায় ধরে ফেলেন। এসময় সেখানে লোকজন জড় হন। তখন রহিমা ঘর থেকে বেরিয়ে আসলে উপস্থিত লোকজন তাঁকে মারপিট করেন। পরে ঘরে ঢুকে আড়ার সাথে ওড়না জড়িয়ে বিধবা রহিমা আত্মহত্যা করেছেন।

রহিমার শ্বশুর মশিয়ার রহমান বলেন, আমি মাছের ঘেরে থাকি। শনিবার রাত ১১ টার দিকে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়ি। রাত ১টার দিকে ২-৩ জন এসে আমাকে ঘুম থেকে তুলে রাস্তায় নিয়ে যায়। সেখানে দেখি বরুনকে আটকে রেখেছে। আমার সামনে ওরা বউমাকে মারপিট করেছে। পরে ঘরে এসে বউমার গলায় ফাঁস দেওয়া দেখি।
মনিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মহসীন আলি বলেন, স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আটক বরুনের সাথে রহিমার পরকিয়া আছে। এ অভিযোগ এনে শনিবার রাতে স্থানীয়রা গৃহবধূ রহিমাকে বকাঝকা করেছে। পরে লজ্জায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি।

মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে গৃহবধূর ভাই মামলা করেছেন। স্থানীয়রা বরুন নামে একজনকে ধরে আমাদের কাছে সোপর্দ করেছে।